বর্তমান সময়ে দেশের অভিনয় জগতে অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল নাম সাদিয়া আয়মান। তবে অভিনয় প্রতিভার সঙ্গে মিষ্টি মেয়ে হিসেবে সবার মনোযোগ কেড়েছেন সাদিয়া। এই অভিনেত্রীর মুখশ্রী, হাসি, সংলাপ, বাচনভঙ্গি—সব কিছুতেই একধরনের স্নিগ্ধতা রয়েছে।
খুব অল্প দিন হলো সাদিয়া এ জগতে কাজ করা শুরু করেছেন। কিন্তু তাঁর করা কয়েকটি চরিত্র দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্য পেয়েছে।
ফলে তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছেন। সাদিয়া প্রথম আলোচনায় আসেন ‘ফুলের নামে নাম’ নাটক দিয়ে। পরবর্তী সময় ‘মায়াশালিক’সহ বেশ কিছু কাজে নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন তিনি। সর্বশেষ চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘ইন্টার্নশিপ’—এ চমৎকার অভিনয়ে সবার মন জয় করে নিয়েছেন এই তরুণ অভিনয়শিল্পী।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশালে ছোটবেলা কেটেছে সাদিয়ার। এইচএসসি পরীক্ষার পর ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি এখন আইন নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তা পেলেও সাদামাটা জীবনই পছন্দ সাদিয়ার। কাজের অবসরে রান্না করতে ভালোবাসেন। একেবারে বাঙালি খাবার যেমন ভাত, ডাল, বেগুনভাজি ও মাংস তাঁর খুব পছন্দের। সুযোগ পেলেই নিজে রান্না ঘরে চলে যান এবং পছন্দের মেন্যু অনুযায়ী বিভিন্ন পদ তৈরি করে ফেলেন।
ন্যাচারাল বিউটির ব্যাকরণসম্মত প্রতিরূপ বলা যায় সাদিয়াকে। এই অভিনেত্রীর হাসিই সবচেয়ে বেশি মন কেড়েছে ভক্তদের। তবে তিনি খুব হালকা মেকআপ নিতে পছন্দ করেন বলে জানান। বর্তমান সময়ের অভিনেত্রী হলেও আগের দিনের ভিন্টেজ ফ্যাশনের প্রতি তাঁর পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। শুটিংয়ে জমকালো ও চরিত্রের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরতে হয় তাঁকে। তাই কাজের বাইরে আরামদায়ক ব্যাগি জিনস ও টি-শার্ট তাঁর অন্যতম পছন্দের। এ ছাড়া যেকোনো ঢিলেঢালা সাদা কুর্তিতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে বিশেষ অনুষ্ঠান বা উৎসবে শাড়ি পরতে বেশি পছন্দ করেন।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন এখনো শেষ না হওয়ায় সাদিয়ার কোনো ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু তিনি যেভাবে এই সিরিজের উচ্ছ্বল ও সাবলীল ইন্টার্নের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, তা সত্যিই অবাক করার মতো। আর তা সবাইকে চমৎকৃতও করেছে। দেখা গেছে তাঁর করা চরিত্র মণীষার অফিসের সবার সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক ও সবার সাহায্যে এগিয়ে আসেন তিনি। অফিসের সুন্দরী, স্মার্ট ও মিষ্টি মেয়ে বলা যায় মণীষাকে।
প্রতিটি চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য মেকআপ ও কস্টিউম—এই দুটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজে মণীষা চরিত্রটিকে জীবন্ত করে তোলার জন্য কস্টিউম ও মেকআপ টিমকে ধন্যবাদ জানান সাদিয়া। তবে চরিত্রের সঙ্গে মানানসই জিন্স, স্কার্ট ইত্যাদি পরেছেন। আর এই পোশাকগুলোয় স্বচ্ছন্দ বলে সাদিয়াকে এ ক্ষেত্রে খুব বেশি ঝামেলায় পড়তে হয়নি।
বাস্তবতা ও ফিকশন দুটি ভিন্ন জিনিস। তবে সিনেমা বা সিরিজের গল্প মূলত বাস্তবজীবন থেকেই তুলে আনা হয়। ইন্টার্নশিপ সিরিজটি সবচেয়ে বেশি তাঁদের কাজে আসবে, যাঁরা ইন্টার্ন হিসেবে কোথাও যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আসলেই অফিসের ভেতরের আবহ কেমন হয়, বসদের কীভাবে খুশি করতে হয় ইত্যাদির পাশাপাশি অফিস–সংস্কৃতির এক দারুণ চিত্র দেখা যায় এই সিরিজে।
রান্নার কথা তো আগেই বলেছি। এ ছাড়া অবসরে সিরিজ-সিনেমা দেখে ও বই পড়ে সময় কাটাতে ভালোবাসেন সাদিয়া। কেবল রান্নাতেই তাঁর আনন্দ নয়, বরং তিনি নিজে একজন খাদ্যরসিকও। তবে পছন্দের কোনো বিশেষ খাবার সেভাবে নেই। সাদা ভাত, ডাল ও মাংস সাদিয়ার বিশেষ প্রিয়। জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ যেমন তাঁর সবচেয়ে প্রিয়, তেমনি প্রিয় তাঁর হিমু ও রূপা সমগ্র। সময় পেলেই হুমায়ূন আহমেদের লেখা পড়েন তিনি।
ছবি: চরকি