ত্বকের নিরাপত্তাই প্রথম
শেয়ার করুন
ফলো করুন

রিজিওনাল স্কিনকেয়ারের এই ট্রেন্ডে কে-বিউটির পরপরই স্পটলাইটে এসেছে জাপানিজ জে-বিউটি ও অস্ট্রেলিয়ান এ-বিউটি। গত তিন বছরে নতুন করে আবির্ভাব হয়েছে তাইওয়ানিজ টি-বিউটি, ইন্ডিয়ান আই-বিউটি। গোটা বিউটি ইন্ডাস্ট্রিকে কয়েক ভাগে বিভক্ত করেছে এই রিজিওনাল স্কিনকেয়ার।

মডেল: নানজীবা, মেকওভার: পারসোনা, ছবি: হাদী উদ্দীন
মডেল: নানজীবা, মেকওভার: পারসোনা, ছবি: হাদী উদ্দীন

পূর্ব এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ খুব কম। নেই কোনো প্রাকৃতিক গ্যাস বা তেলের খনি। খনিজ সম্পদ আছে সামান্য। কিন্তু সেখানে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্লিনজার, শিট মাস্ক, এসেন্স, সিরাম! দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতির চাকা সচল আজ এসবের কল্যাণে। কারণ, এই স্কিনকেয়ার পণ্য আজ দেশটির অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারক পণ্য। দিন দিন সারা বিশ্বে এসবের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এশিয়া থেকে ইউরোপ-আমেরিকা—সব জায়গায় কে-বিউটির জয়জয়কার। এর সূত্রপাত পশ্চিমা দেশগুলোতে কোরিয়ান পপ কালচারের বিস্তারের সময় থেকে।  

বিজ্ঞাপন

কোরিয়ানরা জাতিগতভাবেই স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যসচেতন। সৌন্দর্যচর্চায় তাঁদের মূলমন্ত্র, ‘সবার ওপর ত্বক সত্য, তাহার ওপর নাই’। এ জন্য তাঁদের ত্বক স্বাস্থ্যকর, নিদাগ, টান টান, উজ্জ্বল। শরীরের বয়স বাড়লেও বাড়ে না ত্বকের বয়স। কোরিয়ান ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি স্কিনকেয়ার পণ্য দিয়েই তাঁরা ত্বকের যত্ন নিয়ে আসছেন বহু বছর ধরে। তাঁরা খুব কম মেকআপ ব্যবহার করেন। আর সেখানেও প্রাকৃতিক উপাদানের উপস্থিতি বেশি।

মডেল: অরা, মেকওভার: পারসোনা, ছবি: হাদী উদ্দীন
মডেল: অরা, মেকওভার: পারসোনা, ছবি: হাদী উদ্দীন

কয়েক বছর আগে পশ্চিমা বিশ্বে ঝড় তুলেছে এই কে-বিউটি প্রোডাক্ট। সবাই শুধু কোরিয়ান স্কিনকেয়ার পণ্য ব্যবহার করাই শুরু করেননি, ত্বকের যত্ন এবং সমস্যার সমাধানে অনুসরণ করছেন ম্যাক্সিমালিস্ট টেন স্টেপ রেজিম। অয়েল ক্লিনজিং, ওয়াটার বেজড ক্লিনজিং, এক্সফোলিয়েটিং, টোনিং, এসেন্স, ট্রিটমেন্ট, শিট মাস্কিং, আই কেয়ার, ময়েশ্চারাইজিং ও সানস্ক্রিনিং। জীবনে যত ব্যস্ততায় থাকুক না কেন, ঘর থেকে বেরোনোর আগে আর ঘরে ফিরে এই ১০ ধাপে ত্বক পরিচর্যা করতেই হবে।

বিজ্ঞাপন

টেন স্টেপ স্কিনকেয়ার রুটিন ছাড়াও বছর বছর কে-বিউটি আমাদের দিয়েছে নানা রকমের স্কিন ট্রেন্ড। এর মধ্যে আছে গ্লাস স্কিন, মোচি স্কিন, ডলফিন স্কিন, ক্লাউড স্কিন ইত্যাদি। এখান থেকে যে যাঁর পছন্দমতো ট্রেন্ড বেছে নিচ্ছেন। আবার স্কিনকেয়ার পণ্যে নতুন নতুন সব প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তাদের জুড়ি মেলা ভার।
বর্তমানে অনেক স্কিনফ্লুয়েন্সার আছেন, যাঁরা সর্বক্ষণ তাঁদের ইউটিউব চ্যানেল বা ইনস্টাগ্রামে কোরিয়ান স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের গুণগান করে থাকেন। পশ্চিমে কে-বিউটি জনপ্রিয় করার পেছনেও তাঁদের বেশ অবদান রয়েছে।

মডেল: নানজীবা, মেকওভার: পারসোনা, ছবি: হাদী উদ্দীন
মডেল: নানজীবা, মেকওভার: পারসোনা, ছবি: হাদী উদ্দীন

শ খানেক স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড রয়েছে পুরো দক্ষিণ কোরিয়ায়। এর মধ্যে কিছুসংখ্যক ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। যেমন কোজারেক্স, লিনেজ, পিচ অ্যান্ড লিলি, ব্যানিলা কো, গ্লো রেসিপি, নিওজিন, রোভাক্টিন, একুয়েল ইত্যাদি। শুধু ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলো নয়, বাংলাদেশেও কোরিয়ান স্কিনকেয়ার পণ্যের ভক্ত রয়েছে।

পশ্চিমা ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্য শিল্প বর্তমান সময়ের চেয়ে অন্তত ১২ বছর এগিয়ে আছে। ভবিষ্যতে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী আসবে, কিন্তু কোনোভাবেই কোরিয়ান স্কিনকেয়ারের জনপ্রিয়তা টলবে না, এমনটাই আশাবাদ তাঁদের।

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২২, ১২: ৫৮
বিজ্ঞাপন