সুস্থ স্বাভাবিক ত্বক পেতে বছরের ৩৬৫ দিন নিষ্ঠার সঙ্গে সানস্ক্রিন বা সানব্লক ব্যবহার করতেই হবে। এ নিয়ে কোনো আপস করা যাবে না। ত্বকের সবচেয়ে বড় শত্রু সূর্যের ইউভিএ আর ইউভিবি রশ্মি। এদের থেকে সুরক্ষা পেতে সানস্ক্রিনের কোনো বিকল্প নেই। রোদে পোড়া ত্বকের যতই যত্ন নেওয়া হোক না কেন, এটি ব্যবহার না করলে কোনো কাজই হবে না। মুখ, ঘাড়, হাত ও পায়ের মতো শরীরের উন্মুক্ত স্থানে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। সানস্ক্রিন প্রয়োগের সময় দুই আঙুলের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন, এর ফলে নিশ্চিত হবেন যে আপনি আপনার ত্বকে সঠিক পরিমাণে সানস্ক্রিন ব্যবহার করছেন।
এ ছাড়া ২-৩ ঘণ্টা পরে সানস্ক্রিন পুনরায় প্রয়োগ করার জন্য একটি সানস্ক্রিন স্টিক বা স্প্রে ব্যাগে রাখতে পারেন। আর রোদে বের হওয়ার ২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। বাজারে এখন অনেক ভালো মানের সানস্ক্রিন পাওয়া যায়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি ভিটামিন সি, নায়াসিনামাইড, অ্যালোভেরা আছে এমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যায়। কারণ, এই উপাদানগুলো ত্বককে ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে যেমন সুরক্ষা দেবে তেমনই সান স্পট কমাবে।
রোদে পোড়া ত্বকের যত্নে এক্সফোলিয়েশন বা স্ক্রাবিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্যান ও সান স্পট- দুটি কমাতে এটি বেশ কার্যকর পদ্ধতি। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে ফিজিক্যাল স্ক্রাব ও কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করতে পারেন। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো গ্লাইকোলিক অ্যাসিড। সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলেই চলে। এটি ত্বক থেকে খুব কোমলভাবে মৃত কোষ অপসারণ করতে পারে।
এ ছাড়া রোদে পোড়া ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে স্ক্রাবিংও করা যেতে পারে। স্ক্রাবার হিসেবে চিনি বেশ ভালো উপাদান। বাদামি চিনির সঙ্গে খাঁটি মধু মিশিয়ে, হাতের আঙুল দিয়ে আলতোভাবে চাপ দিয়ে, বৃত্তাকার গতিতে ম্যাসাজ করতে হবে ত্বকে। নাক ও ঠোঁটের পাশেও ভালোভাবে স্ক্রাব করতে হবে। কয়েক মিনিট পর সাধারণ পানিতে ত্বক ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তবে যাদের ত্বক সংবেদনশীল বা অতিরিক্ত শুষ্ক তাঁরা স্ক্রাবার এড়িয়ে কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করুন।
ট্যান ও সান স্পট কমাতে অ্যালোভেরা ও যষ্টিমধু দুর্দান্ত ঘরোয়া উপাদান। সুপারশপ থেকে কেনা হোক বা টবের অ্যালোভেরা—সারা দিনের গরমের পর বাড়ি ফিরে ব্যবহার করলে বেশ আরাম পাওয়া যাবে। মুখ, ঘাড়, হাতে পরিমাণমতো জেল নিয়ে ১৫ মিনিট লাগিয়ে আলতোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার সুতি ভেজা কাপড় দিয়ে ত্বক মুছে ফেলতে হবে।
অন্যদিকে যষ্টিমধু মাস্কও সান স্পটের বিরুদ্ধে বেশ ভালো লড়াই করতে পারে। এ জন্য দরকার হবে ১ টেবিল চামচ যষ্টিমধু গুঁড়া, আধা চামচ চন্দনের গুঁড়া ও ২ টেবিল চামচ দুধ। চাইলে মধুও ব্যবহার করা যেতে পারে। সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করলে কয়েক মাসের মধ্যে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া ত্বকের ধরন বুঝে এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে যাতে নায়াসিনামাইড, ভিটামিন সি, সয়া, অ্যালোভেরা আছে।
ছবি: লা রিভ ও পেকজেলসডটকম