শীত আসতে না আসতেই শুরু হয়ে যায় চুলের বিভিন্ন সমস্যা। তবে সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটি দেখা দেয়, তা হলো চুল একেবারেই রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে যাওয়া৷ আর যাদের চুল এমনিতেই শুষ্ক তাদের তো থাকে বেহাল দশা। এমনকি চুলের আগাও ফাটতে শুরু হয়। সব সময় চুল দেখায় এলোমেলো, বিবর্ণ এবং নিস্তেজ। তাই অন্যান্য সময়ের চেয়ে এ সময়ে চুলের একটু বেশি যত্ন নিতেই হয়।
শীতে চুলের যত্নে যে ব্যাপারটিতে সব থেকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। তা হলো চুল ময়েশ্চারাইজ রাখা। আর বাসায় থাকা বেশ কিছু উপাদান ব্যবহার করেই কিন্তু বানিয়ে নিতে পারেন হেয়ার মাস্ক। যা আপনার চুলকে রাখবে একদম ময়েশ্চারাইজ্ড। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ঘরোয়া উপাদান দিয়েই রুক্ষ শুষ্ক চুলের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার করবেন যেসব মাস্ক।
১. নারকেল তেল ও মধুর হেয়ার মাস্ক
নারকেল তেল ও মধু প্রাকৃতিকভাবেই চুলকে রাখতে পারে ময়েশ্চারাইজ। আর শুষ্ক চুলের জন্য নারকেল তেল আর মধুর এই মাস্ক বেশ কার্যকর। নারকেল তেলের ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের গভীরে প্রবেশ করে চুলের প্রাণ ফিরিয়ে আনে ও মধু চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
উপকরণ:
২ টেবিল চামচ নারকেল তেল
১ টেবিল চামচ মধু
পদ্ধতি:
একটি পাত্রে নারকেল তেল ও মধু মিশিয়ে নিন। এরপর চুলে ভালো ভাবে লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
২. অ্যালোভেরা ও অলিভ ওয়েল হেয়ার মাস্ক
অ্যালোভেরা জেল এবং অলিভ ওয়েল উভয়ই চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে বেশ ভালো কাজ করে। অ্যালোভেরা জেলে থাকা এনজাইম ও অ্যামিনো অ্যাসিড চুলের গভীরে প্রবেশ করে চুলকে রাখে হাইড্রেটেড ও ময়েশ্চারাইজড।
উপকরণ:
১/৪ কাপ অ্যালোভেরা জেল
২ টেবিল চামচ অলিভ ওয়েল
পদ্ধতি:
একটি পাত্রে অ্যালোভেরা জেল ও অলিভ ওয়েল ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। এর পর চুলে ম্যাসাজ করে নিন। ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. কলা ও দইয়ের হেয়ার মাস্ক
কলা ও দইয়ে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান চুলকে ভেতর থেকে করে তোলে মজবুত। পাশাপাশি চুলকে ময়েশ্চারাইজ রাখতেও সাহায্য করে। কলাতে থাকা পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আর দইয়ে থাকা প্রোটিন ও ল্যাকটিক অ্যাসিড চুলের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সাহায্য করে।
উপকরণ:
১টি পাকা কলা
১/৪ কাপ টক দই
পদ্ধতি:
একটি পাত্রে কলা ম্যাশ করুন। ম্যাশ করা কলা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এর পর চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪. ডিম ও দইয়ের হেয়ার মাস্ক
ডিম ও দই চুলের পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়ক। ডিমে থাকে প্রোটিন ও বায়োটিন, যা চুলের গঠন মজবুত করে। আর দইয়ের ল্যাকটিক অ্যাসিড চুলের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়।
উপকরণ:
১টি ডিম
১/৪ কাপ দই
পদ্ধতি:
একটি পাত্রে ডিম ফেটে নিন। এর পর দই মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট রাখুন। ৩০ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫. অলিভ ওয়েল ট্রিটমেন্ট
অলিভ ওয়েলে থাকে ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চুলের গভীরে প্রবেশ করে চুলের পুষ্টি জোগায়। হালকা গরম অবস্থায় এই তেল ব্যবহার করলে চুলের কিউটিকলগুলো খুলে যায় এবং তেলটি চুলের ভেতরে ভালোভাবে প্রবেশ করতে পারে।
উপকরণ:
১/৪ কাপ অলিভ অয়েল
পদ্ধতি:
অলিভ ওয়েল হালকা গরম করে নিন। এর পর চুলে ভালো ভাবে ম্যাসাজ করে নিন। চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। এর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ছবি: হাল ফ্যাশন ও ইনস্টাগ্রাম