২০২৪ সালে সৌন্দর্য দুনিয়া মাতাবে ত্বকের যত্নের যে ট্রেন্ড
শেয়ার করুন
ফলো করুন

মানসিক চাপ বা উদ্বেগ—কোনোটাই ত্বকের জন্য ভালো নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলে তাঁর শরীর কর্টিসল নামের একধরনের হরমোন তৈরি করে, যা কর্টিকোট্রফিন বা সিআরএইচ নির্গত করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপে সিআরএইচ ওভারড্রাইভে চলে যায়। ফলে ত্বকের সেবেশিয়াস গ্রন্থি অতিরিক্ত তেল নির্গত করে। অত্যধিক তেল রোমকূপ বন্ধ করে, ব্রণের প্রকোপ বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া ত্বকের ছোপ ছোপ দাগ, রুক্ষতা, ইনফ্ল্যামেশন, ডার্ক সার্কেল, প্রিম্যাচিউর রিংকেল ইত্যাদির মতো সমস্যা সৃষ্টিতে মানসিক চাপ ও উদ্বেগের দায় রয়েছে।

বিখ্যাত স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড রোডান+ফিল্ডস পরিচালিত ওই গবেষণায় ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৩০ নারীরা অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের সবাই মানসিক চাপজনিত অ্যাডাল্ট অ্যাকনের সমস্যায় ভুগছিলেন। আট সপ্তাহব্যাপী চলা গবেষণায় দেখা গেছে, তিন ধাপের মিনিমাল স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চলায় স্ট্রেসের সঙ্গে নাটকীয়ভাবে অ্যাকনের সমস্যাও কমেছে। ত্বকের যত্নে তাঁরা সবাই অ্যান্টি–অক্সিডেন্টস, প্রিবায়োটিকস, ইলেকট্রোলাইটস–সমৃদ্ধ পণ্যের পাশাপাশি দিনে দুবার সানস্ক্রিন ব্যবহার করেছিলেন। ফলে তাঁদের স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল নিঃসরণের পরিমাণ ৮৩ শতাংশ কমে যায়।

বিজ্ঞাপন

মহামারির সময়টা সবার জন্য খুব বেশি স্ট্রেসফুল ছিল। তাই সে সময় ঘরে থেকেও অনেকে ত্বকের নানা সমস্যায় ভুগেছেন। মহামারির সময়কার সেই মানসিক চাপ এখনো আছে। এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত, মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকতে স্কিনকেয়ার রুটিন ভালো ভূমিকা রাখে।

স্কিনকেয়ার রুটিনের এই স্ট্রেস রিলিফের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ডগুলো প্রাকৃতিক ডি-স্ট্রেসিং আর রিলাক্সেশন উপাদান, যেমন ল্যাভেন্ডার, হলি বেসিল, ক্যামোমাইল, রোজ অব জেরিকো, টি ট্রি অয়েল, আরনিকা ইত্যাদি ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এসেছে। যত দিন যাচ্ছে, এ ধরনের পণ্যের কাটতি বাড়ছেই।

বিজ্ঞাপন

স্কিনকেয়ার রুটিনের এই স্ট্রেস রিলিফের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে এখন নামীদামি ও ইন্ডি স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ডগুলো ঝুঁকেছে অ্যাডাপ্টোজেনিক প্রোডাক্ট তৈরিতে। অ্যাডাপ্টোজেন হচ্ছে এমন ভেষজ উপাদান, যা শরীর থেকে স্ট্রেসের বিষাক্ত প্রভাব কমিয়ে থাকে। এখনকার ডি-স্ট্রেসিং স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টগুলোতে যে অ্যাডাপ্টোজেন ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো স্ট্রেসও কমায়, আবার ত্বকের জন্যও বিশেষ উপকারী। উদাহরণ হিসেবে লিকারিশ বা যষ্টিমধুর কথা ধরা যাক। এটি কর্টিসল নিঃসরণের গতি কমায়, আবার ত্বকের ইনফ্ল্যামেশন ও র‌্যাশও কমিয়ে থাকে।

ইলিউথিরো বা সাইবেরিয়ান জিনসেং ত্বকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের কারণে হওয়া ক্ষতির পরিমাণ কমায়। ফলে ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না। এগুলো ছাড়া আরও অ্যাডাপ্টোজেন আছে, যা ত্বকের অনেক সমস্যা সমাধানে কার্যকর। যেমন আমলা, গোজি বেরি, অশ্বগন্ধা, হোলি বেসিল বা তুলসী, চাগা, রেইশি মাশরুম, ল্যাভেন্ডার, ক্যামোমাইল, রোজ অব জেরিকো, টি ট্রি অয়েল, আরনিকা, মাকা, ত্রিফলা, শিলাজিৎ, ক্যালেন্ডুলা, সেনটেলা এশিয়াটিকা ইত্যাদি। ২০২৪ সালে এই অ্যাডাপ্টোজেনিক ত্বকের যত্নের জন্য তৈরি পণ্যের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে যাবে, বিশেষ করে জেন–জিদের কাছে।

ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০: ২৫
বিজ্ঞাপন