প্রাকৃতিক উপাদানে হোক কোরিয়ানদের মতো ত্বকের যত্ন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

পূর্ব থেকে পশ্চিম, কিশোরী থেকে বয়স্ক নারী সবার কাছেই জনপ্রিয় ত্বকের যত্নে কোরীয় রীতি। বলা যায় সৌন্দর্যচর্চার দুনিয়ায় এক বিপ্লবের নাম ‘টেন স্টেপ স্কিনকেয়ার’। সময়টা ত্বকের যত্নের মিনিমাল রুটিনের। তবুও অনেকে কোরিয়ানদের মতো সুস্থ-সুন্দর ও তারুণ্য উজ্জ্বল ত্বকের আশায় ঝুঁকছে ম্যাক্সিমালিস্ট রুটিনের প্রতি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশে রকেটের গতিতে বাড়ছে কোরিয়ান স্কিনকেয়ার পণ্যের চাহিদা। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। তবে এখানে এ ধরনের ত্বকের যত্নের পণ্য বিশেষ করে ক্লিনজার, এক্সফোলিয়েটর, টোনার, সিরামের দাম বেশ চড়া। তাই অনেকের সাধ থাকলেও পুরোপুরি দশটি ধাপ অনুসরণ করার মতো কোরিয়ান পণ্য কেনার মতো সামর্থ্য হয় না।

 তবে একটা কথা আছে, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। এই ত্বকের যত্নের পণ্য কিনতে না পারলেও দশ ধাপের বিউটি রুটিন মেনে চলা সম্ভব। কারণ, ঘরে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে এগুলো বানানো যায়।    

বিজ্ঞাপন

অয়েল ক্লিনজার

কোরীয়দের দুবার ত্বক পরিষ্কার করার পদ্ধতিকে বলা হয় ডাবল ক্লিনজিং। এর প্রথম ধাপ হচ্ছে অয়েল ক্লিনজিং। ঘরে থাকা যেকোনো তেল দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে পারেন। এমনকি ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ সয়াবিন তেল বা শর্ষের তেলও ব্যবহার করা যাবে। তবে সবচেয়ে ভালো নারকেল বা জলপাইয়ের তেল। এ ধাপে মুখে তেল খুব ভালোভাবে মেখে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে তেল ম্যাসাজ করতে হবে আপার স্ট্রোকে। পাঁচ মিনিট। এরপর একটা সুতি কাপড় বা তুলার প্যাড হালকা কুসুম গরম দিয়ে অল্প ভিজিয়ে মুখ থেকে তেল মুছে ফেলতে হবে। এভাবে মুখের মেকআপ, আটকে থাকা বাইরের ধুলা-ময়লা, অতিরিক্ত সিবাম, এসপিএফ—সবকিছু পরিষ্কার করা যায়।

প্রাকৃতিক ক্লিনজার

অয়েল ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কারের পরও মুখে কিছু ময়লা থেকে যেতে পারে। এ জন্য ওয়াটার বেজড ক্লিনজার ব্যবহার করা হয়। এটি ত্বকের গভীরে গিয়ে পরিষ্কার করে। সাধারণত এ ধাপে নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া চাইলে ঘরেই প্রাকৃতিক ক্লিনজার বানিয়ে নিতে পারেন। মধু, টক দই, ওট মিল্ক ক্লিনজার হিসেবে খুবই ভালো উপাদান। মুলতানি মাটির সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়েও প্রাকৃতিক ক্লিনজার বানানো যায়।

বিজ্ঞাপন

এক্সফোলিয়েটর

ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে এবং রোমকূপ পরিষ্কারের জন্য এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করতে হয়। সপ্তাহে দুই দিনের বেশি ত্বকে এক্সফোলিয়েটর প্রয়োগ করা উচিত নয়। আর ঘরে এটি বানানো খুবই সহজ। লবণ বা চিনি বা আধা ভাঙা কফি বিনের সঙ্গে যেকোনো তেল মিশিয়ে নিলেই হল। মুখে ভালোভাবে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

টোনার

ডাবল ক্লিনজিং ও এক্সফোলিয়েশনের পর ত্বক বেশ শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে তাই চতুর্থ ধাপে টোনার ব্যবহার করতে হয়। এটি ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে। এক্সফোলিয়েটরের মতো ঘরে টোনার বানানো বেশ সহজ। টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন শসার রস, গোলাপ জল, চাল ধোয়া পানি, বেদানার রস, আপেল সাইডার ভিনেগার ইত্যাদি। বাড়তি পুষ্টির জন্য এর সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিতে পারেন।

আই ক্রিম

চোখের নিচের ত্বকের জন্য দরকার বাড়তি যত্ন। কারণ, এটি ত্বকের সবচেয়ে শুষ্ক অংশ। চোখের নিচের কালো দাগ, ফোলা ভাব, বলিরেখা কমানোর জন্য আই ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। এক চামচ অ্যালোভেরা জেল, এক চামচ অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল, হাফ চামচ গ্লিসারিন, একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং একটা প্রিমরোজ অয়েল ক্যাপসুল মিশিয়ে বানিয়ে ফেলুন ঘরোয়া আই ক্রিম।

কোরিয়ান ত্বকের যত্নের পাঁচটি পণ্যই কম খরচে কোনো ঝামেলা ছাড়া নিজেই তৈরি করতে পারবেন। আর বাকি থাকল সিরাম, শিট মাস্ক, ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন। শিট মাস্কের বদলে ঘরে তৈরি মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন সপ্তাহে অন্তত এক দিন। আর সিরাম, ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন যে কোরিয়ানটাই কিনতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। নিজের ত্বকের ধরন বুঝে সাধ্যের ভেতর যেকোনো ক্রিম বা এসপিএফ ব্যবহার করতে পারেন।

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০: ১৬
বিজ্ঞাপন