৫টি সহজ উপায়ে ছেলেদের ব্রণের সমাধান
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ত্বকের খুব সাধারণ কিন্তু যন্ত্রণাদায়ক একটি সমস্যা হলো ব্রণ। মেয়েদের ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি হলেও অনেক ছেলেরাও এর ভুক্তভোগী। ত্বকের যত্নের ব্যাপারে সচেতন না হওয়ার কারণে তাঁরা বুঝে উঠতে পারেন না এ অবস্থায় কী করা উচিত। আবার অনেকেই আছেন, যাঁরা আলসেমি করে ব্রণের সমস্যাকে অবহেলা করেন। পরে ত্বকের অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়ে যায়। অথচ মাত্র ৫টি সহজ উপায় মেনে চললেই ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ত্বক ছোঁয়া যাবে না

ত্বকে ব্রণ থাকুক বা না থাকুক যখন-তখন মুখের ত্বকে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। হাতে অনেক ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা ত্বকে রোমকূপের ভেতর আটকাতে পারে। ব্রণের শুরু কিন্তু এভাবেই হয়। তাই মুখের ত্বকে হাত দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। সবচেয়ে ভালো হয় হাত সব সময় জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার রাখলে।

বিজ্ঞাপন

সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার করা

ব্রণ ত্বকের যেকোনো জায়গায় দেখা দিতে পারে, তবে এগুলো মুখেই বেশি দেখা দেয়। বিজ্ঞানীরা ‘প্রোপিওনিব্যাকটেরিয়াম’ নামের একটি ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করেছেন, যা ব্রণের কারণ হতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়া প্রদাহ সৃষ্টি করে, যখন এটি সিবামকে ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিণত করে।

প্রতিদিন ত্বকের অতিরিক্ত তেল, ময়লা ও ঘাম অপসারণ করা ব্রণ নিরাময় ও প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। তবে মুখ খুব বেশি ধোয়া ব্রণের অবস্থাকে আরও বেশি খারাপ করতে পারে। এর পেছনে দুটি কারণ আছে। ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ দিয়ে অতিরিক্ত ত্বক পরিষ্কার করলে ময়লা ও ঘামের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সিবাম অপসারিত হয়ে যায়। তখন এর ভারসাম্য বজায় রাখতে ত্বক আরও বেশি সিবাম উৎপাদন করে এবং ত্বক তৈলাক্ত হয়ে ওঠে। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি।

অন্যদিকে আমাদের ত্বকে কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া বা মাইক্রোবায়োম থাকে, যা ব্রণের ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করে ত্বককে ব্রণমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। অতিরিক্ত ত্বক পরিষ্কার করলে এই ব্যাকটেরিয়াগুলোও মারা যায়, তখন ব্রণ হয়।

এ জন্য সঠিক নিয়মে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদের রাতে ঘুমানোর আগে বা বাইরে থেকে ঘরে ফিরে অবশ্যই ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। আবার যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত ও মিশ্র, তাঁদের দিনে দুইবার ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভালো মানের ফেসওয়াশ বেছে নিতে হবে। ফেসওয়াশে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ও বেনজয়েল পার–অক্সাইড আছে কি না, তা যাচাই করে নিতে হবে।

টিপস: যাঁদের ত্বকে ব্রণ আছে, তাঁরা মুখ ধোয়ার পর তোয়ালের বদলে টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে পারেন। এতে উপকার পাওয়া যাবে।

বিজ্ঞাপন

শেভিংয়ে সতর্কতা

ব্রণপ্রবণ ত্বক হলে খুব সতর্কতার সঙ্গে শেভ করা উচিত। শেভ করার আগে অবশ্যই রেজর গরম পানি বা জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। যাঁরা মাল্টি-ব্লেড সেফটি রেজর ব্যবহার করেন, তাঁদের উচিত এক সপ্তাহ পরপর ব্লেড পরিবর্তন করা।
শেভ করার জন্য ত্বকে ভালো মানের প্রিশেভিং অয়েল বা শেভিং ক্রিম অথবা সম্ভব হলে দুটিই ব্যবহার করতে হবে। শেভের পর অ্যালকোহলমুক্ত শেভিং লোশন লাগাতে হবে। কেউ চাইলে এর পরিবর্তে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে দেখতে পারেন। শেভের পর অনেকের মুখে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ওঠে। অ্যালোভেরা জেল এ সমস্যা নিরাময় ও প্রতিরোধ করতে পারে।

বিছানার চাদর ও বালিশের কভার ঘন ঘন পরিবর্তন করা

প্রতি রাতে কয়েক ঘণ্টা আমরা বিছানার চাদর ও বালিশের কভারে গড়িয়ে কাটানো হয়। যদি এগুলো জীবাণু দ্বারা আবৃত থাকে, তাহলে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই এক সপ্তাহ পরপর বিছানার চাদর ও বালিশের কভার পরিবর্তন করতে হবে।

সিরাম ব্যবহার

আমাদের দেশে এখনো অনেক ছেলে ত্বকের যত্নের ব্যাপারে খুব একটা সচেতন নন। তাঁরা ত্বকের কোনো সমস্যা হওয়ার আগপর্যন্ত যত্ন নিতে অনীহা দেখান। ছেলেদের ব্রণ হলে তাঁরা শুধু ফেসওয়াশ ও ক্রিমেই সমাধান খোঁজে। কিন্তু দ্রুত ব্রণ নিরাময়ের জন্য সবার অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট–সমৃদ্ধ সিরাম ব্যবহার করা উচিত। এ ক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার করার পর স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, নায়াসিনামাইড, অ্যাজেলাইক অ্যাসিড সিরাম ব্যবহার করতে হবে। এগুলো ব্রণ নিরাময়ে সহায়তা করবে। এরপর নিজের ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলেই চলবে।

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৩, ১৪: ০০
বিজ্ঞাপন