স্কিন ফ্লাডিং-এর ধারণাটি খুবই সহজ। পদ্ধতিটিতে অনেক ধরণের হাইড্রেটিং পণ্য দিয়ে ত্বকে দীর্ঘস্থায়ী আর্দ্রতার লেয়ার তৈরি করা হয়। লেয়ারিং শুরু হয় পাতলা পানিভিত্তিক পণ্য দিয়ে এবং শেষ হয় ঘন, ভারী ময়েশ্চারাইজারের লেয়ার দিয়ে। পানিভিত্তিক পণ্য ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করে ত্বকে পানি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। এ ধরণের পণ্য বাছাই করতে প্রথমে হাইড্রেটিং উপাদানগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। বর্তমানে স্কিনকেয়ার পণ্যে ব্যবহার করা কিছু প্রচলিত হাইড্রেটিং এজেন্টের মধ্যে রয়েছে, হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন, ইউরিয়া, অ্যামোনিয়া ল্যাকটেট, সেরামাইডস, প্যান্থেনল ইত্যাদি।
ক্লিনজার
স্কিন ফ্লাডিংয়ের প্রতিটি ধাপে আর্দ্রতা নিশ্চিত করতে হবে। আর এর শুরু হবে ক্লিনজার দিয়ে। অনেক ক্লিনজার আছে, যা ত্বকের ওপরের প্রয়োজনীয় তেল পরিষ্কার করে ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। এগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। এমন ক্লিনজার বাছাই করতে হবে, যাতে ত্বকের ধুলাবালু পরিষ্কার করার পর ত্বক আর্দ্র থাকে। হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন, সেরামাইডস, অ্যালোভেরা ইত্যাদি আছে—এমন ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে। তাই হাইড্রেটিং উপাদান, যেমন হায়ালুরনিক মুখ ধোয়ার পর ত্বক মুছে একেবারে শুকিয়ে ফেলা যাবে না, হালকা ভেজাভাব রাখতে হবে।
টোনার বা মিস্ট
এই ধাপ কেউ চাইলে এড়িয়ে যেতে পারেন। কারণ, বর্তমানে অনেক ডার্মাটোলজিস্ট বলেন, ত্বকের যত্নে টোনার বা মিস্ট ব্যবহার না করলেও চলে। কিন্তু কেউ যদি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টযুক্ত টোনার ব্যবহারে উপকার পেয়ে থাকেন, তাহলে এর ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারেন। যাঁদের ত্বকে পানিশূন্যতার সমস্যা আছে বা ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাঁরা চাইলে হায়ালুরনিক অ্যাসিড, অ্যালানটোইন, সেরামাইডস, গ্লিসারিন, পেপটাইডস আছে, এমন টোনার বেছে নিতে পারেন।
সিরাম
পানিশূন্য ত্বকে অবশ্যই হাইড্রেটিং সিরাম ব্যবহার করতে হবে। ক্লিনজারের মতোই হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন, সেরামাইডযুক্ত সিরাম ব্যবহার করতে হবে। ভিটামিন ই এবং পলিগ্লুটামিক অ্যাসিডও হাইড্রেটিং উপাদান হিসেবে বেশ কার্যকর। পলিগ্লুটামিক অ্যাসিড হায়ালুরনিক অ্যাসিডের চেয়ে চার গুণ বেশি আর্দ্রতা ধরে রাখে। এ ছাড়া প্ল্যান্ট-বেসড উপাদান, যেমন আরগান অয়েল, অ্যালোভেরা, রোজহিপ অয়েল, সি কেল্প, জোজোবা আছে—এমন সিরামও শুষ্ক ও পানিশূন্য ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী।
ময়েশ্চারাইজার বা হাইড্রেটর
স্কিন ফ্লাডিংয়ের শেষ ধাপে ব্যবহার করতে হয় ময়েশ্চারাইজার বা হাইড্রেটর। পানিশূন্য ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ভারী ওয়াটার-বেসড ক্রিম বা জেল লাগাতে হবে। এর প্রধান উপাদান হিসেবে থাকতে হবে হায়ালুরনিক অ্যাসিড, ডাইমেথিকন, গ্লিসারিন, প্রপিলিন গ্লাইকোল, সরবিটল, প্রোটিনস বা ইউরিয়া—এসব উপাদান ত্বক আর্দ্র করে। ময়েশ্চারাইজার বা হাইড্রেটরের সেকেন্ডারি উপাদানও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্যবহৃত জেল বা ক্রিমে ল্যানোলিন, মিনারেল অয়েল বা পেট্রোলিয়াম—তিনটি উপাদান বা এর কাছাকাছি কিছু থাকতে হবে। কারণ, এগুলো ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।
ত্বকের পানিশূন্যতা রোধে আরও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন দিনে সবার অন্তত আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। তবে দৈনন্দিন কাজকর্ম ও ওজনের ওপর নির্ভর করে শরীরে আরও বেশি পানির প্রয়োজন হতে পারে।
সূত্রঃ ইনসাইডার, বার্ডি
ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম