চুল ধূসর হতে শুরু করলেই যেভাবে যত্ন নিতে হবে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

এমন সময় আমাদের সবার জীবনেই আসে, যখন আমাদের কালো চুলের মাঝে দু-একটি করে সাদা চুলের উপস্থিতি চোখে পড়ে। আমাদের কারও কারও কম বয়সেই চুল পেকে যায়। অনেকের চুলে আবার পর্যায়টি আসে দেরিতে। যদিও চুল পাকা একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, কিন্তু মাথার ত্বকের শুষ্কতা ও চুলের রুক্ষতা চুল পাকার প্রক্রিয়াটিকে প্রভাবিত করে।

ধূসর চুলের যত্ন নিলে তা থাকবে আগের মতোই ঝলমলে ও প্রাণবন্ত
ধূসর চুলের যত্ন নিলে তা থাকবে আগের মতোই ঝলমলে ও প্রাণবন্ত
ছবিঃ রোয়েনা রাসনাত মডেলঃ ফোয়ারা ফেরদৌস

বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকা চুল মানেই যে শুষ্ক চুল, তা নয়। কিন্তু চুল তখনই রং হারাতে থাকে, যখন চুলের গোড়ার ফলিকলের সিবেসিয়াস গ্রন্থিগুলো আগের তুলনায় স্থায়ীভাবে কম তেল তৈরি করতে শুরু করে, যা শুষ্কতার দিকেই যায় আসলে। এ ছাড়া শুষ্ক চুল দ্রুত মেলানিন হারায়। ফলে চুলের গঠন ও স্বাস্থ্য বদলে যেতে পারে। কিন্তু কিছু উপায় অবলম্বন করে ধূসর চুলের যত্ন নিলে তা থাকবে আগের মতোই ঝলমলে ও প্রাণবন্ত। আর ধূসর চুল প্রাকৃতিকভাবে যেমন ঠিক তেমনই রাখা এখন সুপার ট্রেন্ডি। এতে বিভিন্ন হেয়ার ডাইইয়ের ক্ষতিকারক প্রভাবে থেকেও বাঁচানো যায় চুলকে।

বিজ্ঞাপন

চুল ধূসর হওয়া বা পাকতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই চুলকে সুস্থ রাখতে নিচের উপাদানগুলো চুলের যত্নে এখনই যুক্ত করুন।

ধূসর চুল প্রাকৃতিকভাবে যেমন ঠিক তেমনই রাখা এখন সুপার ট্রেন্ডি
ধূসর চুল প্রাকৃতিকভাবে যেমন ঠিক তেমনই রাখা এখন সুপার ট্রেন্ডি
ছবিঃ রোয়েনা রাসনাত মডেলঃ ফোয়ারা ফেরদৌস

১. গ্লিসারিন ও শিয়া বাটার

ধূসর চুলের সঙ্গে চুলের কিছু সমস্যার যোগসূত্র আছে, যেমন রুক্ষ, শুষ্ক ও ভঙ্গুর চুল। এর সমাধানের জন্য চুলের যত্নের রুটিনে গ্লিসারিন ও শিয়া বাটার যোগ করতে পারেন। এ উপাদানগুলো চুলে হেয়ারপ্যাক হিসেবে অথবা তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। হেয়ারপ্যাক বা তেল, যা–ই ব্যবহার করুন না, কেন অন্তত ৩০ মিনিট তা মাথায় রাখুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ উপাদানগুলো চুলের শুষ্কতা ও ফেটে যাওয়ার প্রবণতা কমায় এবং চুলের আর্দ্রতা বৃদ্ধিতে কাজ করে।

২. ভেষজ তেল

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সিবেসিয়াস গ্রন্থিগুলোর কাজ ধীরগতির হয়ে যায় এবং আমাদের মাথার ত্বকে কম তেল উৎপন্ন হয়। এতে মাথার ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এ সমস্যার প্রতিকারের জন্য হেয়ার কেয়ার রুটিনে বাওবাব বা আমলকী তেলের মতো ভেষজ তেল যোগ করা যেতে পারে। এটি মাথার ত্বককে ময়েশ্চারাইজড করবে এবং মাথার ত্বকের স্বাভাবিক তেল উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে সাহায্য করবে। এ ছাড়া মরিঙ্গা তেল চুলের আর্দ্রতা পূরণ করতে, নিস্তেজ চুলকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শুষ্কতা ও চুলকানি রোধ করে এবং মাথার ত্বকের আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় রাখে।

বিজ্ঞাপন

৩. বায়োটিন

ধূসর চুল প্রায়ই পাতলা হয়ে যায় এবং দ্রুত ক্ষয় হয়। যখন চুল মেলানিন হারাতে শুরু করে, তখন চুল দুর্বল হয়ে ঝরে যায়। তাই চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিচক্রকে সচল রাখার জন্য বায়োটিন, ভিটামিন সি আর অ্যামিনো অ্যাসিডযুক্ত হেয়ার সিরাম বা প্রোটিন প্যাক ব্যবহার করা ভালো। এতে চুলের ঘনত্ব কমবে না এবং চুল পড়া বন্ধ হবে।


৪. আপেলের স্টেম সেল

চুলের প্রতিটি স্ট্র্যান্ডের জীবনচক্রের তিনটি ধাপ রয়েছে—বৃদ্ধি, পরিবর্তন ও বিরতি। আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রক্রিয়াটি ধীরগতির হয়ে যায় এবং তখন বিশ্রাম পর্যায়ে চুল বেশি সময় থাকে। এ পরিস্থিতি চুলকে পাতলা করে এবং শুষ্কতার দিকে নিয়ে যায়। এ কারণে আপেলের স্টেম সেলযুক্ত সিরাম হেয়ার কেয়ার রুটিনে যোগ করার সুপারিশ করেন বিশেষজ্ঞরা। এটি চুলের বৃদ্ধির ধাপটিকে দীর্ঘায়িত করে এবং চুলের শুষ্কতা ও রুক্ষতা হ্রাস করে।

৫. স্কোয়ালিন

ধূসর চুলের রোদের তাপ থেকে বিশেষ সুরক্ষার প্রয়োজন। পাকা চুল ছিদ্রযুক্ত ও কিছুটা রুক্ষ হয়ে থাকে। তাই যেকোনো তাপের উৎস, বিশেষ করে সূর্যের কারণে ক্ষতির আশঙ্কা আরও বেশি থাকে। সরাসরি সূর্যের তাপ থেকে চুলকে রক্ষা করতে স্কার্ফ ব্যবহার করা ভালো। স্কোয়ালিন হলো হালকা তেলজাতীয় একটি উপাদান, যা সূর্যের তাপের মতো পরিবেশগত ক্ষতি থেকে চুলকে সুরক্ষা দেয়। স্কোয়ালিনযুক্ত হেয়ার সিরাম চুলকে সূর্যের রশ্মির ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান।

তথ্যসূত্রঃ এল ম্যাগাজিন, হেলথলাইন

ছবিঃ রোয়েনা রাসনাত ও পেকজেলস ডট কম

হিরো ইমেজঃ রোয়েনা রাসনাত

ছবিতে আছেনঃ ফোয়ারা ফেরদৌস

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন