শীতে পা ফাটার আগেই যা করতে হবে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

দারুণ সাজগোজ আর সঙ্গে নজরকাড়া পোশাক। কিন্তু গোড়ালির ফাটা দাগে পুরো লুকটাই মাটি হতে পারে এই উৎসবের মৌসুমে। শীতকালে পা ফাটার সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরই শুষ্ক আর ঠান্ডা আবহাওয়ায় পায়ের গোড়ালির ত্বকে ফাটল দেখা দেয়।

আর নারীরাই বেশি ভোগেন এ সমস্যায়। বেশিরভাগ সময় এই ফাটা পা কষ্ট দিলেও খুব ক্ষতির কারণ হয় না। তবে ডায়াবেটিক রোগী ও যাঁদের অতিরিক্ত গভীর ক্ষত তৈরি হয়, তাঁদের শীতকাল আসার আগে থেকেই পায়ের যত্ন নিতে হবে৷ আর তার জন্য এলোমেলো টোটকা বা বিজ্ঞাপনে মজে গিয়ে চোখ কপালে তোলা দামের সব ক্রিমের শরণাপন্ন না হয়ে অবলম্বন করতে হবে বৈজ্ঞানিক তরিকা।  

বিজ্ঞাপন

১.গোড়ালির ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা

প্রথম কথা হচ্ছে, একটু ভারি ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ হিল বাম ব্যবহার করতে হবে। দেখে নিতে হবে এতে ইউরিতা, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, আলফা হাইড্রক্সি অ্য্যাসিড, বা স্যাকারাইড আইসোমারেটের মতো উপাদান আছে কি না৷ এই ক্রিমগুলো প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধের দোকান, সুপারশপ, বিশেষায়িত স্কিনকেয়ার স্টোর বা অনলাইন পেজে মিলবে।

দিনের শুরুতেই গোড়ালির ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করতে এসব হিল বাম লাগানো উচিত। এরপর দিনে দুই থেকে তিনবার গোড়ালি ময়েশ্চারাইজ করতে হবে তা দিয়ে।

বিজ্ঞাপন

২.পা এক্সফোলিয়েট করা

ভিজিয়ে রেখে পা এক্সফোলিয়েট করতে হবে। ফাটল-প্রবণ গোড়ালির চামড়া বেশ মোটা হয়ে থাকে, তা বাকি অংশের তুলনায় রুক্ষও হয়। চাপ পড়লেই তাই সম্ভাবনা থাকে ফেটে যাওয়ার। তাই ভিজিয়ে রেখে এক্সফোলিয়েট করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

পা ভেজানোর জন্য ঈষদুষ্ণ সাবান-পানি নিতে হবে৷ ভিজিয়ে রাখতে হবে বিশ মিনিট। লুফাহ, ফুট স্ক্রাবার বা ঝামা অর্থাৎ পিউমিস স্টোন দিয়ে আলতো হাতে ঘষে তুলতে হবে ত্বকের মরা ও পুরোনো কোষ। এবার মুছে নিয়ে পায়ে হিল বাম বা ভারি যেকোন ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে৷ এবার পেট্রোলিয়াম জেলি পায়ে মেখে এই আর্দ্রতা ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এ অবস্থায় মোজা পরে থাকাই ভালো, যাতে সব জায়গায় লেগে না যায় ক্রিম, বাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি।

৪.পায়ের আধুনিক স্কিনকেয়ার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পায়ের যত্নে এখন হিল স্লিভস বা লিকুইড ব্যান্ডেজ পাওয়া যায়। স্লিভসে উপকারি তেল আর ভিটামিন থাকে বলে হিল স্লিভস মোজার মতো পরে থাকলে পা ভিজিয়ে রাখার মতোই উপকার মেলে অনেকটা। হিল স্লিভস যেখানে মোজার মতো পরে থাকলে পা ফাটা প্রতিরোধ করা যায়, লিকুইড ব্যান্ডেজ আবার ফেটে যাওয়া পায়ের যত্নে কার্যকর। এতে আরও বেশি ফেটে গিয়ে ক্ষত তৈরি হওয়া থেকে গোড়ালি রক্ষা করা যায়। একটু গভীর ক্ষতের জন্য স্প্রে দিয়ে আটকে দেওয়া যায় এমন লিকুইড ব্যান্ডেজ ব্যবহার করলে ভালো। পরিষ্কার, শুকনা পায়ে এই ব্যান্ডেজ লাগাতে হবে।

৫.প্রাকৃতিক উপায়ে গোড়ালির যত্ন

পা ভেজানোর পর তোয়ালেতে মুছে খাঁটি নারকেল তেল লাগানো যায়। আর্দ্রতা ধরে রাখরে এর কার্যকর ভূমিকার প্রমাণ মিলেছে। এর প্রদাহরোধী আর সংক্রমণরোধী গুণও রয়েছে, যা ফাটা পায়ে দিতে পারে স্বস্তি।
সিরকা ব্যবহার করা যায় পা ভেজাত৷ সঙ্গে যেকোন প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার যেমন তেল, শিয়া বাটার, কোকো বাটার ইত্যাদি। প্যারাফিন ওয়্যাক্স তো খুবই জনপ্রিয় পায়ের যত্নে৷

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বিশেষ সতর্কতা

ফাটা পায়ে গভীর ক্ষত বা সংক্রমণ হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে৷ ক্ষেত্র বিশেষে পোডিয়াট্রিস্ট বা পদ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস থাকলে৷

সূত্র: হেলথলাইন

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৩, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন