সুন্দর কোনো টিউটোরিয়াল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পেলব কোমল হাত। কিন্তু আকর্ষণীয় আঙুলের নেইল পেইন্টটি চিড় ধরা, জায়গায় জায়গায় রং উঠে গেছে। ভিডিওর পুরো আবেদনটিই মার খেয়ে যায় এমন হলে। আবার সূক্ষ্ম কারুকার্য করা ট্রেন্ডি নেইল আর্টে এমন দশা হলে পার্টি লুকে রয়ে যায় চোখে পড়ার মতো খুঁত। এদিকে নেইল পেইন্ট বাঁচাতে পটের বিবি হয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকারও তো জো নেই। তাই সবদিক বিবেচনায় নখ রাঙানোর সময়ই কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করার কথা বলেন রূপবিশেষজ্ঞরা।
নখ অতিরিক্ত লম্বা না করা
পুরো লুকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আর স্বাস্থ্যসম্মত দৈর্ঘ্যের নখ রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। একটি নখ ছোট, আরেকটি বড়, এমনও যেন না হয়। কার্ডাশিয়ান স্টাইলে লম্বা নখ রাখা ব্যস্ত কর্মজীবন আর সংসার সামলে আসলেই সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে বরং নেইল পেইন্টের বারোটা বেজে মনমেজাজ হয়ে উঠবে তিরিক্ষি। সঠিকভাবে ট্রিম করা নখে সহজে, কম সময়ে নেইল পেইন্টের কোট বসে যায়। পাশ থেকে ঘষা লেগে উঠেও যায় না।
টপকোট হতে হবে উপযোগী
শাইনি বা চকচকে হোক, আর ম্যাট ফিনিশ—টপকোটটি নির্বাচন করতে হয় সাবধানে। নেইল কালার চিপড বা চিড় ধরে যাওয়া থেকে রক্ষা করে, নখের শক্তি বাড়ায়, এমন টপকোট বেছে নিতে হবে। যদি একটু বেশি দামের মানসম্পন্ন পণ্য ব্যবহার করতে হয়, এ ক্ষেত্রে এ নিয়ে কার্পণ্য করা উচিত নয়। কারণ, বারবার নষ্ট হয়ে যাওয়া নেইল পেইন্ট নতুন করে করতে আগের চেয়ে বেশি খরচ হবে।
বেজকোটের ব্যাপারে সমঝোতা নয়
মসৃণ আর সমান ফিনিশের নেইল পেইন্টের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় হচ্ছে সঠিক বেজকোট। সরাসরি নখের ওপরে এই বেজকোটই প্রথম লাগানো হয়। পরবর্তী নেইল পেইন্টের ওপরেই বসে। দীর্ঘস্থায়ী ও শক্ত গ্রিপযুক্ত বেজকোটের ওপরেই নির্ভর করে নখের পুরো সাজ।
দুদিন অন্তর টপকোট লাগানো
মেকওভারে, যেমন টাচআপ জরুরি, তেমনি নেইল পেইন্টের বেলায়ও তা সত্যি। নখের ওপর দিয়ে সারা দিন মুঠোফোন, ল্যাপটপ, কাগজ-কলম, সাবানপানি, রান্নাঘরের তেল-মসলা, কাটাকুটি, রান্নাবান্নার মতো কিছু না কিছু চলতেই থাকে। তাই দুদিন অন্তর স্বচ্ছ টপকোট লাগিয়ে নিলে মূল নেইল পেইন্ট বা নেইল আর্ট থাকে অক্ষুণ্ন।
ফেটে যাওয়া নখ তখনই কেটে ফেলা
যত সুন্দর আর ব্যয়বহুল ম্যানিকিউর আর নেইল আর্টই হোক, চিড় ধরা, নখ ভেঙে বা ফেটে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটবেই। সে ক্ষেত্রে সেই নখ ট্রিম করে বা কেটে ছোট করে ফেলা উচিত। নয়তো সমস্যা বাড়তে থাকে আর বারবার টান পড়ে নখের কোনায় ব্যথা বা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।
গ্লাভস ব্যবহার করা
শক্তিশালী ক্ষারযুক্ত সাবান, অম্লীয় ক্লিনার ব্যবহার করতে বা ঘষামাজা করে কিছু পরিষ্কার করার সময় অবশ্যই গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। রান্নাঘরে কোটা-বাছার সময়ও গ্লাভস পরলে ভালো। এতে নখে অযাচিতভাবে রং লেগে যাওয়া, বিবর্ণ হওয়া বা নখ ও কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বাঁচা যায়।
লম্বা সময় ধরে নখ ভিজিয়ে না রাখা
গোসল বা অন্য কোন কারণে লম্বা সময় ধরে নখ গরম পানির সংস্পর্শে থাকলে পদার্থবিদ্যার নিয়ম মেনে নখ পানি শুষে নেয়, কিছুটা প্রসারণও ঘটে। এতে নেইল পেইন্ট ফেটে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।
প্রতিটি কোট সম্পূর্ণ শুকিয়ে নেওয়া
নেইল পেইন্ট সম্পূর্ণভাবে শুকাতে এক ঘণ্টা লেগে যায়। দীর্ঘস্থায়ী নখের রঙের জন্য এটুকু ধৈর্য তো ধরতেই হবে। অনেক সময় ওপরে শুকনা মনে হলেও ভেতরে ভেজা থেকে যায়। এ অবস্থায় নখ রাঙানোর পরবর্তী পর্যায়ে চলে গেলে নেইল পেইন্ট সহজেই নষ্ট হতে পারে।
তথ্যসূত্র: স্টাইল ক্রেজ, অ্যালিউর, কসমোপলিটান
কৃতজ্ঞতা: ওমেন্স ওয়ার্ল্ড এসথেটিক ক্লিনিক; ছবি: সাইফুল ইসলাম