সারা দিন পর ঘরে ফিরে সবার আগে মুখের ত্বক খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এ জন্য ডাবল ক্লিনজিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। ত্বক পরিষ্কারের প্রথম ধাপে ক্লিনজিং বাম বা অয়েল দিয়ে সব মেকআপ ও সানস্ক্রিন পরিষ্কার করতে হবে। এরপর একটি ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ফোমিং ফেসওয়াশ ও অন্য সব ধরনের ত্বকের জন্য জেল ক্লিনজার।
উজ্জ্বল ও সতেজ ত্বকের জন্য এক্সফোলিয়েশন অত্যন্ত জরুরি। এক্সফোলিয়েট না করলে ত্বকের ওপরে মৃত কোষ জমতে থাকে। এতে ত্বক নিস্তেজ ও রুক্ষ দেখায়। এক্সফোলিয়েশন ত্বকের মৃত কোষগুলো অপসারণের পাশাপাশি রোমকূপ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এতে ত্বক অনেক উজ্জ্বল ও সতেজ দেখায়। এক্সফোলিয়েশনের জন্য অনেকে ফিজিক্যাল স্ক্রাব ব্যবহার করেন। বর্তমানে ডার্মাটোলজিস্টরা এটি থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। কারণ, স্ক্রাব ত্বকের সঙ্গে খুব রুক্ষ আচরণ করে। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর আবার বেশ কোমলভাবে ত্বকের মৃত কোষ দূর করে। তবে যারা কখনোই এটি ব্যবহার করেনি, তাদের ঈদ উপলক্ষে নতুন করে ব্যবহার করতে হবে না।
এর বদলে অন্যভাবে ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েশন করা যেতে পারে। এ জন্য দরকার হবে কুসুম গরম পানি ও একটি নরম ওয়াশক্লথ। কুসুম গরম পানিতে ওয়াশক্লথ প্রায় ১০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে নরম করে নিন। ত্বক খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে, ভেজা অবস্থায় নরম ওয়াশক্লথটি দিয়ে খুবই আলতো করে ঘষতে থাকুন। এভাবে কিছুক্ষণ করলেই ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার হবে।
মাস্কিং ত্বক উজ্জ্বল করতে বেশ সহায়তা করে। বর্তমানে বাজারে তিন ধরনের মাস্কের জনপ্রিয়তা অনেক। শিট মাস্ক, ক্লে মাস্ক ও স্লিপিং মাস্ক। ক্লে মাস্ক ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে এবং ত্বকে তেলের ভারসাম্য বজায় রাখে। তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য এটি বেশ ভালো কাজ করে। শিট মাস্ক বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ত্বক ও ত্বকের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে যেকোনো শিট মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। স্লিপিং মাস্ক আর নাইট ময়েশ্চারাইজারের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই।
ত্বকের উজ্জ্বলতার জন্য সপ্তাহে অন্তত একবার ক্লে মাস্ক বা তিনবার শিট মাস্ক ও স্লিপিং মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। ভিটামিট সি, নায়াসিনামাইড, মালবেরি বা বেয়ারবেরি এক্সট্রাক্ট, গ্রেপ সিড এক্সট্রাক্ট আছে—এমন উপাদানসমৃদ্ধ মাস্ক বাছাই করতে হবে।
খুব অল্প সময়ে ও সহজে ত্বক উজ্জ্বল করতে চাইলে সিরামের চেয়ে ভালো আর কিছু হতেই পারে না। এ জন্য এমন সিরাম ব্যবহার করতে হবে যাতে, অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট হিসেবে ব্রাইটেনিং এজেন্ট রয়েছে। যেমন ভিটামিন সি, ই, নায়াসিনামাইড, ট্রানেক্সামিক অ্যাসিড, ফেরুলিক অ্যাসিড ইত্যাদি। এই উপাদানগুলো ত্বক উজ্জ্বল করতে অনেক বেশি কার্যকর।
ময়েশ্চারাইজার ছাড়া কোনোভাবে ত্বক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হবে না। এই গরমে অনেকে এটি ব্যবহার করতে চায় না। কিন্তু সব ধরনের ত্বকের জন্য সব ঋতুতেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার আবশ্যক। যাদের ত্বক শুষ্ক, তারা দুবেলা এবং যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও মিশ্র, তাদের রাতে খুব হালকা ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এতে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকার পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল হবে।
বছরের ৩৬৫ দিনই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। কারণ, আমাদের ত্বকের সবচেয়ে বড় শত্রু সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি। ত্বকের উজ্জ্বলতার জন্য যত যা–ই কিছু করা হোক না কেন, যদি সানস্ক্রিন ব্যবহার করা না হয়; তাহলে সব পরিশ্রম মাঠে মারা যাবে। তাই সানস্ক্রিন না লাগিয়ে বাইরে তো দূরের কথা, ঘরেও থাকা যাবে না।