ঢাকা মেকার্স ২–এর প্রথম দিন: নবীন ও অভিজ্ঞ শিল্পীদের কর্মশালায় আগ্রহীদের ভিড়
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আর্ট, ক্র্যাফট, ফ্যাশনসহ আরও অনেক কিছুর সমন্বয় নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গুলশান লিংক রোডের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে শুরু হয়েছে ঢাকা মেকার্স ২। চলবে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এ উৎসবে ঢাকা মেকার্স স্থানীয় ও সমসাময়িক শিল্পী ও কারিগরদের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। এখানে শতাধিক আর্টিজান ও শিল্পীর অংশগ্রহণে মার্কেটপ্লেস ও ৮৫ জন শিল্পীর কাজ নিয়ে গ্যালারি রয়েছে। সংগীতায়োজনও থাকছে প্রতিদিন।

তবে এ উৎসবের অন্যতম মূল আকর্ষণ ছিল চারু ও কারুশিল্পের বৈচিত্র্যময় কর্মশালা। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল শিল্পী ও কারিগরদের সৃজনশীলতার প্রকাশ সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া। উৎসবের প্রথম দিন মোট ছয়টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে প্রথমে অনুষ্ঠিত হয় ‘মাসু আঁকে’র উদ্যোগে চিত্র কর্মশালা। এতে তরুণ চিত্রশিল্পী মাসুদা খান ছবি আঁকার প্রশিক্ষণ দেন। এরপর ক্যালিগ্রাফিশিল্পী, আর্কিটেক্ট ও বংশীবাদক নাজিম আনোয়ার ক্যালিগ্রাফির নানা প্যাটার্নের কর্মশালা নেন। দুটি কর্মশালাতেই তরুণ থেকে বয়স্ক—সবাই বেশ আগ্রহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। শেখার যে কোনো বয়স নেই, সেটা অংশগ্রহণকারীদের উদ্যম দেখে ভালোভাবেই বোঝা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এরপরই অনুষ্ঠিত হয় বাঁশ দিয়ে বুননের মাস্টারক্লাস। কীভাবে বাঁশের চটির গাঁথুনিতে ঘর সাজানোর সুন্দর সব শোপিস থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করা যায়, সেটারই হাতেখড়ি দেওয়া হয় এই কর্মশালায়। এতে প্রশিক্ষক ছিলেন অনন্ত কুমার দাস। তিনি ৩০ বছর ধরে বাঁশের কুটিরশিল্প নিয়ে কাজ করছেন। ঢাকা মেকার্সের মার্কেটপ্লেসে তাঁর একটি ছোট স্টলও বসেছে।

তাঁকে সহায়তা করেছেন এ উৎসবের আর্ট গ্যালারির কিউরেটর শাওন আকন্দ। তিনি বলেন, এই শিল্প এখন হারিয়ে যাচ্ছে। এটি শহরের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এ কর্মশালার উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। বাঁশের কুটিরশিল্প সম্পর্কে জানতে তরুণ ও বয়স্কদের পাশাপাশি বিদেশি নাগরিকদেরও অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। তাঁদের একজন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক কিম। কাজের সুবাদে বর্তমানে তিনি ঢাকায় থাকছেন। তিনি জানান, ‘বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ এই বাঁশের কুটিরশিল্প। বাঁশের তৈরি জিনিস আমাকে মুগ্ধ করে। আমি এ দেশকে ভালোভাবে জানার জন্য এই ঐতিহ্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে চাই। এ জন্যই এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

এরপরই বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ওয়েল্ডিং ক্র্যাফট দিয়ে গয়না তৈরির কর্মশালা। ওয়েল্ডিং বা ঝালাইপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখানে বিভিন্ন ধাতুকে ভেঙেচুরে গয়নার আকার দেওয়া হয়। এ কর্মশালায় শিশুদেরও অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। প্রশিক্ষণার্থীরা ওয়েল্ডিংয়ের মাধ্যমে মেটালের গয়না বানান। এ কর্মশালার প্রশিক্ষক ছিলেন সারিয়াল ফরেস্টের উদ্যোক্তা হিবা শরফুদ্দিন।

দিনের শেষ দুটি কর্মশালায় গেরিলা ফিল্মমেকিংয়ের বেসিক কোর্স করান তরুণ পরিচালক ও সিনেমাটোগ্রাফার মঞ্জুর অনিক এবং স্টপ-মোশন অ্যানিমেশনের কোর্স করানো হয় ওগোপোগো স্টুডিওর তরফ থেকে। আগামী তিন দিন আর্ট, ক্র্যাফটের অনেক কর্মশালার আয়োজন থাকছে ঢাকা মেকার্সে। আগ্রহীরা চাইলে অনুষ্ঠানস্থলে এসে নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিয়ে কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

এ উৎসবের সামগ্রিক আয়োজনে ঢাকা মেকার্সের সঙ্গে আছে সিটি ব্যাংক। এ ছাড়া রয়েছে ইএমকে সেন্টার আর গ্যেটে ইনস্টিটিউট। ইভেন্টের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার আলোকি কনভেনশন সেন্টার, এমেরাল্ড ইভেন্টস, আইস টুডে, দেশার ওয়ার্কস ও ভাই ভাই প্রোডাকশনস। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আছে হাল ফ্যাশন ও সময় টিভি। উল্লেখ্য, ঢাকা মেকার্সের এমন দ্বিতীয় আয়োজন এটি। আরও তথ্যের জন্য ভিজিট করুন www.dhakamakers.com

ছবি: হালফ্যাশন

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ০১
বিজ্ঞাপন